নিজস্ব প্রতিবেদক : তার পেটে খুব বেশি জল নেই। এরপরও যেনো নীল ছিটানো, নয়নাভিরাম! পুরো নদটাকেই নীল করে রেখেছে তার স্বচ্ছ জল। এ কারণে নীল জলের নদও বলা হয় তাকে।
চোখ ধাঁধানো নীল জল ভ্রমণপিপাসুদের বড়ই কাছে টানে। প্রকৃতিপ্রেমী কিংবা ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এ নীল জলের নদ দারুণ পরিচিতি পেয়েছে। তাকে পরিচয় করে দিতে কোনো বিশেষণ ব্যবহার করতে হয় না। সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সারীঘাটের পথ ধরেই এ নদের বেড়ে ওঠা, আঁকাবাঁকা পথ তৈরি করেই সে চলছে অবিরাম।
এখানে দেখা মেলে আকাশ-পাহাড় আর চা বাগানের মিতালি। সুরমা, কুশিয়ারা, পিয়াইন ও সারীনদীর অপরূপ সৌন্দর্য সিলেটকে বাংলাদেশের কাছে আলাদাভাবে পরিচিত করে তুলছে। আর সেই পরিচিতির অন্যতম অলঙ্কার জৈন্তাপুরের নীল নদ নামে পরিচিত লালাখাল।
সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ও চারিকাটা ইউনিয়নে অবস্থিত ‘লালাখাল’। চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে উঠলে ‘লালাখাল’র নীল জলের সৌন্দর্য দেখে সে ক্লান্তিও ভুলে যান আগন্তুকরা। তার স্বচ্ছ জলের মায়ায় পথিকও পথ হারায়।
সিলেট শহর থেকে বাস কিংবা মাইক্রোবাসযোগে উত্তর-পূর্ব অঞ্চল সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার সারীঘাটেই নামতে হবে ভ্রমণপিপাসুদের। সেখান থেকে ৩০-৪৫ মিনিটে ছোট ইঞ্জিতচালিত নৌকায় করে পৌঁছে যাবেন লালাখাল চা বাগান ফ্যাক্টরি ঘাটে।
ভ্রমণের সময় চোখে পড়বে লালাখালের নীল জল। যেনো প্রকৃতি আপন মহিমায় সাজিয়ে রেখেছে লালাখালের নীল নদকে। এ জল এতো বেশি স্বচ্ছ যে নদের নিচ পর্যন্ত চোখে ভেসে ওঠে।
লালাখাল নদের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে নৌকা ভ্রমণের কোনো বিকল্প নেই। এ নদের পানির রং নীল।
প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য্য। বৃষ্টি হলে এর রং বদলায়, হয় সামান্য ঘোলাটে। এরপর ফের পুরনো দৃশ্য, সেই নীল রং। সারী নদীর উৎসমুখে তেমন কোনো বাড়িঘর নেই। রয়েছে হরেক রকম বনজ সম্পদ, সবুজ গাছপালা। নৌকায় করে যাওয়ার সময় মাঝেমধ্যে চোখে পড়বে কাঁশবনের ঝোপ।
এ নদে অসংখ্য বাঁকের দেখা মেলে। আর প্রতিটি বাঁকই দেখার মতো, নয়ন জুড়ায়! লালাখাল নদ থেকে কিছু দূরে ছোটবড় পাহাড়ও দেখা মেলে। পাহাড় আর টিলা দেখলে মনে হয় কেউ যেনো সযতেœ সাজিয়ে রেখেছে।
লালাখালের চারপাশ গোধূলিলগ্নে আরও মোহনীয় ও অপরূপ। চারপাশে গাছে বসা পাখির কিচিরমিচির শব্দ, সে এক অন্যরকম অনুভূতি। আর সন্ধ্যায় সূর্যডুবির দৃশ্য আরও মুগ্ধকর অপরূপ!
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন যেনো সাধারণ পর্যটকদের এ নীল জলের লালাখালকে দেখার মতো পরিবেশ তৈরি করে দেয়। তিনি এলাকাটি পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবিও জানান।