নিজস্ব প্রতিনিধি: জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই নেতার দ্বন্দ্বে হতাশায় পড়েছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগ। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই প্রবাসী নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী ও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মধ্যে চলছে দ্বন্দ্ব। তারা দু’জনই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। তার মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিনি ২০০৮ সালে শুধু যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক পদ পরিচয়ে সিলেট-২ আসনে নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে শফিক চৌধুরী বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী বর্তমান নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে চমক সৃষ্টি করেন। বর্তমানে শফিক চৌধুরী দেশে অবস্থান করে জেলা ও উপজেলায় রাত-দিন দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়রুজ্জামান চৌধুরী।
দেশের রাজনীতিতে জেলা অথবা উপজেলাতে তার কোনো পদ-পদবি নেই। তিনি শুধু লন্ডনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে দেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করে আসছেন। অনেকটা কৌশলে দলের ভেতরে গ্রুপিং সৃষ্টি করে জেলা ও উপজেলার অনেক নেতাকর্মী দিয়ে তার গুণকীর্তন চালিয়ে যাচ্ছেন। আর ওই গ্রুপিং দ্বন্দ্বে দুই বছর ধরে আটকে আছে উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ২০১৫ সালের ৮ জুন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়।
ওই সম্মেলনের দিন রাতে গোপন ভোট না করে কণ্ঠভোটে পংকি খানকে সভাপতি ও বাবুল আখতারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। তারা দু’জনই শফিক চৌধুরী গ্রুপের নেতা। এ সময় কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এই কণ্ঠভোটের প্রতিবাদ করেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গ্রুপের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, গোপন ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করতে হবে। আনোয়ারুজ্জামান গ্রুপের নেতাকর্মীদের দাবির মুখে দীর্ঘ দুই বছরেও ওই তালিকার কমিটি প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে জেলা কমিটির সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
আর ওই দ্বন্দ্বে দুই বছর ধরে এভাবেই ঝুলে রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি। এছাড়া একই দ্বন্দ্বে আটকে আছে উপজেলা যুবলীগের কমিটিও। ওই দ্বন্দ্বের কারণে স্থানীয়ভাবে নেতৃত্ব সংকটে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। সোমবার উপজেলা ছাত্রলীগের একটি কমিটি ঘোষণা করা হলেও বির্তক চলছে। ওই কমিটির বিরুদ্ধে আরেকটি বিদ্রোহী কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। তাই নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাশাপাশি গ্রুপিংয়ের বাইরে থাকা
অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দ্বন্দ্বের বিষয়টি অস্বীকার করে শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা। দেশে জেলা অথবা উপজেলায় তার কোনো রাজনৈতিক পদ-পদবি নেই। তাই তার সঙ্গে দ্বন্দ্বের প্রশ্নই ওঠে না। আগস্ট মাসের পরে বিশ্বনাথ সহ আটকে থাকা সব উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানান।